
এস এম ইকবাল হোসেনঃ পৃথিবীর সমস্ত মানুষ আজ দু’টো শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এক ভাগে রয়েছে মুসলিমরা এবং অন্য ভাগে হিন্দু, বৌদ্ধ, খৃস্টানসহ বাকী অন্যান্য সমস্ত ধর্মালম্বীরা। মুসলমানরা ছাড়া অন্যান্য ধর্মালম্বীরা সবাই এক সূরে কথা বলে। এদের ধর্মীয় বিশ্বাস ভিন্ন হলেও মন মানসিকতার দিক থেকে সবাই প্রায় একই রকমের। যার কারণে তারা হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদ গঠন করেছে। এই হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদ থেকেই বুঝা যায় তারা মুসলমানদেরকে শত্রু মনে করে। অর্থাৎ তারা মুসলমানদেরকে বিশ্বাস করে না।
মুসলিমরাও আবার দু’টো শিবিরে বিভক্ত। এক ভাগে আছে ধর্মমানা মুসলিম। এরা ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়সহ জীবনের সর্ব ক্ষেত্রে ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলে। অন্যভাগে আছে ঐসমস্ত মুসলিম যারা ব্যক্তি জীবনে কিছুটা ধর্মীয় অনুশাসন মানলেও সামাজিক বা রাষ্ট্রীয় জীবনে ধর্মকে একেবারেই মানতে চান না। মুসলিমরা পরস্পর ভাই হলেও দ্বিতীয় ভাগের মুসলিমরা সেটা মানেন না বলেই আমার প্রতিয়মান হয়। ফলে কোন দেশের মুসলিমরা অন্য ধর্মালম্বীদের দ্বারা নির্যাতিত হলে এদের মনে কোন দাগ কাটে না।
দ্বিতীয় শ্রেণির মুসলিমরা কিছুটা সুবিধাভোগীও। এরা নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে অমুসলমানদের সাথে হাত মিলাতেও কুন্ঠাবোধ করে না। আপন ভাইয়ের গলায় ছুরি বসিয়ে হলেও এরা স্বীয় ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে চায়। সৌদি আরবসহ কয়েকটি মুসলিম দেশ আমেরিকার পরামর্শে কাতারের উপর অবরোধ করা থেকেই তার প্রমাণ পাওয়া যায়।
মায়ানমারের বৌদ্ধরা সেখানকার মুসলমানদের হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন করে তাদের বাপদাদার ভিটা থেকে উচ্ছেদ করলেও দ্বিতীয় শ্রেণির মুসলমানদের তাতে কিছুই যায় আসে না। এরা মুখে কুলুপ এটে চুপ করে থাকে। পাছে দাদারা নাখোশ হন এই ভয়ে এরা চুপ করে থাকে।
ঠিক যেই মূহুর্তে মায়ানমারের সেনাবাহিনী কর্তৃক সেখানকার মুসলমানদেরকে হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন ও অগ্নি সংযোগ করে তাদের নিজ দেশ থেকে উচ্ছেদে বাধ্য করা হচ্ছে, ঠিক সেই মূহুর্তে হিন্দু রাষ্ট্র ভারত তাদের দেশ থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বের করে মুসলমানদেরকে মৃত্যু মুখে ঠেলে দিচ্ছে। রোহিঙ্গারা মুসলিম বলেই তাদেরকে ভারত থেকে বের করে দেয়া হচ্ছে। হাজার হাজার রোহিঙ্গাকে মায়ানমার থেকে হত্যা, ধর্ষণ ও নির্যাতন করে দেশ ছাড়তে বাধ্য করলেও ভারত এব্যাপারে টু শব্দটি পর্যন্ত করে নি।