গাজীপুরকে করোনামুক্ত না করে ঘরে না ফেরার পণ : মেয়র জাহাঙ্গীর প্রচ্ছদ প্রাকৃতিক দূর্যোগ রাজনীতি এপ্রিল ২৭, ২০২০এপ্রিল ২৮, ২০২০0 গাজীপুর প্রতিনিধিঃ ‘মেয়র তো দেশে আরও অনেকেই আছেন। কই, কাউকে তো দেখছি না পরিবার-পরিজন থেকে আলাদা হয়ে শুধু মানুষের জন্য রাতদিন ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কেউ তো নিজ খরচায় বিদেশ থেকে সুরক্ষা সরঞ্জাম এনে হাসপাতালে বিলাচ্ছেন না। এই একজন মেয়র, যিনি গাজীপুরে করোনার আঁচ লাগার আগে থেকেই চোখকান খোলা রেখে মাঠে নেমে পড়েছেন। এমন মেয়রই তো চাই।’ গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র অ্যাডভোকেট মো. জাহাঙ্গীর আলমের প্রসঙ্গ তুলে এভাবেই নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেন গাজীপুর সদরে একটি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক আলতাব হোসেন। অধ্যাপক আলতাবের মুখে যখন মেয়র সম্পর্কে এই স্তুতি, তখন সমগ্র গাজীপুরে করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ৩০৮ জন। ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের পর গাজীপুরই এখন গোটা বিশ্বকে নাড়িয়ে দেওয়া ভাইরাসটির অন্যতম কেন্দ্রস্থল। গাজীপুর লকডাউন করা হয়েছে। তবে তার আগে থেকেই নানা তৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন মেয়র। খবর নিয়ে জানা গেছে, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস দ্রুত ও সহজ মাধ্যমে সংক্রামিত হয়। এ জন্য নিজের মমতাময়ী মা, প্রিয়তমা স্ত্রী এবং প্রাণের সন্তানের থেকে আলাদা হয়ে গেছেন জাহাঙ্গীর আলম। যাতে গাজীপুরবাসীর জন্য নিরলসভাবে কাজ করতে পারেন। করোনা থেকে গাজীপুরের মানুষকে রক্ষার তাগিদে চীন থেকে আমদানি করেছেন ৭০ হাজার কীট। বিনামূল্যে বিভিন্ন হাসপাতালে বিতরণের উদ্দেশ্যে আনা হলেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মের মারপ্যাঁচে সেগুলো আটকে রয়েছে। তবে পিপিই, গ্লাভস, মাস্ক, স্যানিটাইজারসহ চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য আনা সুরক্ষা সামগ্রীগুলো বিতরণ করা হচ্ছে এখনও। শুধু গাজীপুর নয়, চারপাশের বিভিন্ন এলাকার হাসপাতালেও সুরক্ষা সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন তিনি। সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যেই সম্ভাব্য ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে ভাবছেন মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব যেন আগেই নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন, সে লক্ষ্যে জাপান থেকে উন্নতমানের ফগার মেশিনসহ কিছু প্রয়োজনীয় সামগ্রী আমদানির উদ্যোগ নিয়েছেন। এ ছাড়া বিদ্যমান পরিস্থিতি বিবেচনায় চলমান পদক্ষেপগুলো অব্যাহত রয়েছে। জানা গেছে, শুধু সুরক্ষা সামগ্রী না, লকডাউনের এই সময়ে বেকার হয়ে যাওয়া গাজীপুরের নিম্নআয়ের পরিবারে নিয়মিত খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন মেয়র। এ জন্য তিনি প্রতিটি ওয়ার্ডে আলাদা করে কমিটি করে দিয়েছেন। গঠন করা হয়েছে সমন্বিত ত্রাণ বিতরণ সেল। নিম্নআয়ের পাশাপাশি মধ্যবিত্ত পরিবারেরও খোঁজ নিচ্ছেন। বিভিন্ন জায়গা থেকে খবর পাওয়া মাত্রই পৌঁছে দিচ্ছেন খাদ্য সামগ্রী। গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার রিক্সাচালক আবদুর রহিম বলেন, ‘লকডাউনের কারণে অনেকদিন রিক্সা নিয়ে বের হতে পারি না। একদিন রিক্সা না চালালে উপোষ থাকা লাগে। প্রথম দুদিন অনেক কষ্ট করেছি। এরপর মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের ত্রাণ পেয়েছি। এ পর্যন্ত দুইবার খাবার পেয়েছি। ফলে এখন আর কোনো সমস্যা নেই।’ গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের একজন চিকিৎসক বলেন, ‘সরকারের তরফ থেকে সুরক্ষা সামগ্রী পাওয়ার আগেই আমরা মেয়রের কাছ থেকে পিপিই, গ্লাভস, মাস্ক এবং স্যানিটাইজার পেয়েছি। ফলে শুরু থেকেই আমরা চিকিৎসা অব্যাহত রাখতে পেরেছি। এখনও তেমন কোনো সমস্যা হচ্ছে না। তবে অভ্যন্তরীণভাবে আমরা সচেতন থাকলেও বহিরাগত সমস্যার কারণে গাজীপুরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা অনেক বেড়ে যায়।’ এ প্রসঙ্গে মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমার বৃদ্ধা মাকে ছাড়া অনেকদিন আলাদা থাকছি। এটি খুবই কষ্টের। মাকে না দেখে খেতেই পারি না। স্ত্রী-সন্তানের কাছ থেকেও ছুটি নিয়েছি। আলাদা থাকছি, শুধু মানুষের কল্যাণে যেন কাজ করতে পারি এই ভেবে। এখন কোনো পিছুটান নেই, প্রতিবন্ধকতা নেই। যেদিকে প্রয়োজন হচ্ছে ছুটে যাচ্ছি।’ বেশ আগে থেকেই সতর্ক অবস্থায় ছিলেন জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘আমরা খুবই সচেতন ও সতর্ক ছিলাম। কিন্তু বহিরাগত কিছু সমস্যার কারণে হঠাৎ এখানে করোনা শনাক্ত শুরু হয়। বিশেষ করে পোশাক কারখানার শ্রমিকদের কারণে তালগোল পেকে যায়। তবে পরিস্থিতি অনুযায়ী সবাইকে সুরক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করছি। আশা করি পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবো।’ এখনও গাজীপুরে কেউ করোনায় মারা না যাওয়ার বিষয়টি আশা জাগাচ্ছে বলেই মন্তব্য করেন তিনি। Related Share on Facebook Share 0 Share on TwitterTweet Share on Pinterest Share 0 Share on LinkedIn Share Share on Digg Share Print Print 0 Total Shares করোনা ভাইরাস সম্পর্কে যেকোনো পরামর্শ বা উপদেশের জন্য উল্লেখিত হটলাইনে যোগাযোগের অনুরোধ জানানো হয়েছে : ৩৩৩, ০১৯৪৪৩৩৩২২২, ০১৪০১১৮৪৫৫১; ০১৪০১১৮৪৫৫৪; ০১৪০১১৮৪৫৫৫; ০১৪০১১৮৪৫৫৬; ০১৪০১১৮৪৫৫৯; ০১৪০১১৮৪৫৬০; ০১৪০১১৮৪৫৬৮; ০১৯২৭৭১১৭৮৫; ০১৯৩৭০০০০১১; ০১৯২৭৭১১৭৮৪ এবং ০১৯৩৭১০০১১।স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হটলাইন নম্বর হচ্ছে-১৬২৬৩।এ ছাড়া ফেসবুক, মেসেঞ্জার ও ই-মেইল বার্তা পাঠানো যাবে। ফেসবুক আইডি: Iedcr, COVID-19 Control Room, e-mail : iedcrcovid19@gmail.com