মসজিদে পড়া যাবে নামাজ; গাজীপুর মেয়র তবে কি ভুল করেছিলেন? সারা বাংলা মে ৬, ২০২০মে ৬, ২০২০0 গাজীপুর প্রতিনিধিঃ করোনাভাইরাস সংকট মোকাবিলায় শুরু থেকে সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিলো মসজিদে মুসল্লির সংখ্যা সীমিত করা। স্পর্শকাতর এই সিদ্ধান্তটি বাস্তবায়ন করা সরকারের জন্য এতো সহজ ছিলোনা। কারণ স্বাধীনতাবিরোধী গোষ্ঠী মসজিদ ইস্যুতে জল ঘোলা করতে শুরু থেকেই তৎপর ছিলো। সাধারণ মানুষের সরলতার সুযোগে সরকার বিরোধী নানা উষ্কানী শুরু থেকেই দিয়ে আসছে তারা। মসজিদে মুসল্লি কমানো নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় ছিলো স্বার্থান্বেষী মহলটি। শেষ পর্যন্ত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়তায় খুব বেশিদূর এগোতে পারেনি স্বাধীনতাবিরোধীরা।অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে ইতিমধ্যে শর্ত সাপেক্ষে তৈরী পোষাক কারখানা খোলা রাখা হয়েছে। গণপরিবহন, বিমান ও রেল বন্ধ থাকলেও বিভিন্ন যানবাহনের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে খোদ রাজধানীতে। ঢাকার বাইরের বিভিন্ন এলাকায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা লেশ মাত্র দেখা যায়নি। ঢাকার অলিগলির দোকানপাট খুলেছে আরো আগে। এছাড়া ঢাকার বাইরে বেশিরভাগ এলাকায় কাঁচাবাজরসহ সব ধরণের দোকানপাট খোলা রয়েছে।এর মধ্যে গত ২৮ এপ্রিল গাজীপুরের মেয়র আলহাজ্ব এ্যাডঃ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। যেখানে স্থানীয় মুসলমানরা উপস্থিত ছিলেন। তৈরী পোষাক কারখানা খোলা রয়েছে এই বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষন করে সমসজিদে নামাজ পড়ার অনুমতি দেওয়ার জন্য মেয়রের প্রতি অনুরোধ জানা তারা। এই বিষয়টি উপলব্ধি করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। কিন্তু এই বিষয়টি নিয়ে এতো বেশি সমালোচনা হয়েছে যা কোনভাবেই কাম্য নয়। এছাড়া সিটি করপোরেশনের মতো বৃহৎ একটি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের মেয়র হিসেবে সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করেই সব সময় কাজ করতে হয়। মসজিদ খোলার বিষয়ে সিটি করপোরেশন তেমন কোন সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে পারে না। করোনাভাইরাসের মতো এমন একটি মহামারির সময় তো নয়ই। শেষ পর্যন্ত মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মতো একজন জনদরদি মানুষকে নাজেহাল হতে হলো দেশবাসীর কাছে। অথচ আজ বুধবার শর্ত সাপেক্ষে সরকার মসজিদে নামাজ পড়ার অনুমতি দিয়েছে। তবে গাজীপুরের মেয়র একই কথা বলে কী কোন অন্যায় করেছিলেন?এখন আসুন জেনে নেই কাকে আমরা বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে ফেলেছিলাম। দেশে মোট ১২টি সিটি করপোরেশন রয়েছে। এরমধ্যে গাজীপুর সিটি করপোরেশন খুব একটা পুরনো নয়। প্রতিষ্ঠান হিসেবে এখনো অনেক কিছুরই অভাব রয়েছে। এরপরও অন্য ১১টি সিটির মেয়র যখন সরকারের দিকে সব কিছুর জন্য তাকিয়ে ছিলো, ঠিক তখন নিজের পয়সা খরচ করে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ বাস্তবায়নে তৎপর হয়েছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। দেশে যখন এন-৯৫ মাস্কের চরম সংকট চলছিলো, তখন মেয়র নিজের অর্থ দিয়ে বিদেশ থেকে প্রায় লক্ষাধিক মাস্ক ও করোনা পরীক্ষার কিট নিয়ে আসেন। এরপর, কেএন-৯৫ মাস্ক, থার্মোমিটার এবং ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী এনে বিনামূল্যে বিলিয়েছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। এরমধ্যে,বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল,ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল,সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ, কুর্মিটোলা হাসপাতাল, শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিক্যাল কলেজ টংগী সরকারি হাসপাতাল সহ বড় বড় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তিনি পিপিইসহ অন্যান্য চিকিৎসা সামগ্রী বিনামূল্যে হস্তান্তর করেছেন।গাজীপুরের ডাক্তাররা বাসা থেকে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা দিতো রোগীদের। এতে চিকিৎসকদের পরিবার মারাত্মক ঝুঁকিতে পড়ে। গাজীপুরে চিকিৎসকসহ বহুলোক করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় চিকিৎসকরা সেবা দিতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। ঠিক এমন সময় এই গাজীপুরের মেয়র ১০টি আবাসিক হোটেল এবং রিসোর্টে চিকিৎসকদের থাকার ব্যবস্থা করেন। এসব হোটেল-রিসোর্টে থেকে সরাসরি হাসপাতালে চলে যেতেন চিকিৎসকরা। বহু চিকিৎসক মেয়রের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করে সুরক্ষা সামগ্রী নিয়েছেন। এর বাইরে লক্ষাধিক হতদরিদ্র পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছেন মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। কর্মহীন নানা পেশা ও সম্প্রদায়ের বাড়িতে বাড়িতে খাদ্যদ্রব্য পৌঁছে দিয়েছেন তিনি।একজন মেয়র যখন এতোকিছু করছেন, ঠিক তখন তাকে বিব্রত ও বিভ্রান্ত করতে একদল মানুষ উঠেপড়ে লেগেছে। তারা খুব সুচিন্তিতভাবে তাঁকে বিতর্কিত করার চেষ্টায় লিপ্ত। মসজিদ নিয়ে মেয়র যে ঘোষণা দিয়েছিলেন তা ছিলো একান্তই নগরবাসীর দাবি। এখন সরকার দেশবাসীর কথা চিন্তা করে সসজিদে নামাজের অনুমতি দিয়েছে। মেয়রও ঠিক একই কথা বলেছিলেন। কিন্তু তাঁকে খুব বাজেভাবে নাজেহাল করা হলো।এভাবে কাজের মানুষদের বিভ্রান্ত করলে এক সময় তাঁরা কাজের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন। তাই এই দেশের স্বার্থেই আমাদের উচিত মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মতো ব্যক্তিদের পাশে থাকা, উৎসাহ দেওয়া। তবেই করোনাভাইরাসের মতো বৈশ্বিক এই মহামারির বিরুদ্ধে জয়ী হওয়া সম্ভব। Related Share on Facebook Share 0 Share on TwitterTweet Share on Pinterest Share 0 Share on LinkedIn Share Share on Digg Share Print Print 0 Total Shares করোনা ভাইরাস সম্পর্কে যেকোনো পরামর্শ বা উপদেশের জন্য উল্লেখিত হটলাইনে যোগাযোগের অনুরোধ জানানো হয়েছে : ৩৩৩, ০১৯৪৪৩৩৩২২২, ০১৪০১১৮৪৫৫১; ০১৪০১১৮৪৫৫৪; ০১৪০১১৮৪৫৫৫; ০১৪০১১৮৪৫৫৬; ০১৪০১১৮৪৫৫৯; ০১৪০১১৮৪৫৬০; ০১৪০১১৮৪৫৬৮; ০১৯২৭৭১১৭৮৫; ০১৯৩৭০০০০১১; ০১৯২৭৭১১৭৮৪ এবং ০১৯৩৭১০০১১।স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হটলাইন নম্বর হচ্ছে-১৬২৬৩।এ ছাড়া ফেসবুক, মেসেঞ্জার ও ই-মেইল বার্তা পাঠানো যাবে। ফেসবুক আইডি: Iedcr, COVID-19 Control Room, e-mail : iedcrcovid19@gmail.com