
এস,এম ইসাহক আলী রাজু, নাটোর :
নাটোরের গুরুদাসপুরে বিয়ের মাত্র পাঁচ দিনের মাথায় মিম আক্তার (১৬) নামে এক নববধূর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকায় মিম আক্তারের স্বামীসহ ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতরা হলেন, মিম আক্তারের স্বামী ফরহাদ হোসেন (২১) ফরহাদ হোসেনের প্রথম স্ত্রী বড়াইগ্রাম উপজেলার নিশ্চিন্তপুর গ্রামের ইমা বেগম (১৮), ফরহাদ হোসেনের প্রথম পক্ষের শ্বশুড় তফের উদ্দিন (৪৭) ও শ্বাশুড়ী শুকজান বেগম সুখি (৩৫)।
মঙ্গলবার (২৭) মার্চ রাত ৯ টার দিকে উপজেলার ঝাউপাড়া গ্রামের তার শ্বশুড়বাড়ির পাশের একটি বাঁশ ঝাড় থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার করা হয়। নিহত মিম আক্তার গুরুদাসপুর উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের হামলাইকোল গ্রামের মনিরুল ইসলামের মেয়ে।
থানা পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, ফরহাদ হোসেন ৮ মাস পূর্বে বিয়ে করেন পার্শ্ববর্তী উপজেলার বড়াইগ্রামের নিশ্চিতপুর গ্রামের তফের উদ্দিন এর মেয়ে ইমা (১৮) কে। বিয়ের কিছুদিন পর তার শ্বশুর তফের উদ্দিন (৪৫) ও শ্বাশুরী শুকজান ওরফে সুখি (৩৫) এর সাথে নানা বিষয়ে ঝগড়া বিবাদ এবং মার ধরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় সহ্য করতে না পেরে ইমা স্বামী ফরহাদ কে তালাক করে। এদিকে তালাক দেবার ৭ মাস পর গত ২২ মার্চ উপজেলার ঝাউপাড়া গ্রামের তৌহিদুর রহমানের ছেলে ফরহাদ হোসেনের সাথে হামলাইকোল গ্রামের মনিরুল ইসলামের মেয়ে মিম আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের দুই দিন পর গত ২৪ মার্চ মিমের বাবা মিমের শ্বশুড়বাড়িতে মিমকে দেখতে যায়। কিন্তু সেখানে মিমের সাথে তার দেখা হয়না এবং পরিবারের লোকজন এলোমেলো কথা বলতে শুরু করে। পরে বিষয়টি তার কাছে সন্দেহ হলে তিনি এ ঘটনায় গুরুদাসপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে পুলিশ মঙ্গলবার (২৭) মার্চ সন্ধ্যায় মিম আক্তারের স্বামী ফরহাদ হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ফরহাদ হোসেন মিমকে গলা টিপে হত্যার পর বাড়ীর পাশে বাঁশ ঝাড়ে পুতে রেখেছে বলে স্বীকারোক্তি দেয়। পরে তার দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মাটি খুড়ে মিম আক্তারের মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিলীপ কুমার দাস ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, স্বামী ফরহাদ হোসেন, তার প্রথম স্ত্রী ও শশুর -শাশুরী এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে মিমের লাশ বাড়ির পাশে মাটিতে পুতে রেখে ছিল। এঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে।