
নওগাঁ প্রতিনিধি:
নওগাঁর রাণীনগরের “আবাদপুকুর কলেজ” গত দীর্ঘ প্রায় ১৮ বছরেও এমপিও ভুক্ত না হওয়ায় ওই কলেজের প্রায় ৩০ জন শিক্ষক/কর্মচারী মানবেতর জীবন যাপন করছেন। দীর্ঘ সময় ধরে বিনা বেতনে চাকুরী করার ফলে আর্থিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন তারা। এছাড়া কলেজে নতুন ভবন না থাকায় পূর্বের সেই ইটের দেয়াল আর টিনের ছাউনির ফাটল ধরা পূরনো ভবনে ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছেন শিক্ষক/শিক্ষার্থীরা ।
জানা গেছে, গত ২০০০ইং সালে রাণীনগর পূর্বাঞ্চলে শিক্ষার মান উন্নয়ন ও সুষ্ঠু পরিবেশে শিক্ষা বিস্তারের লক্ষে উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার পূর্বে আবাদপুকুর এলাকায় “আবাদপুকুর কলেজ” প্রতিষ্ঠা করা হয় । এলাকার সচেতন,গন্যমান্য ও উদারশীল ব্যাক্তিদের সহযোগিতায় দানকৃত জায়গায় কলেজটি স্থাপন করা হয়। প্রাথমিক ভাবে ইটের দেয়াল তুলে টিনের ছাউনি দিয়ে কলেজের কার্যক্রম শুরু করে কলেজটি। কলেজে শিক্ষার্থী ভর্তি করে প্রথম এইচ এসসি পরীক্ষায় খুব ভাল ফলা-ফল আসে । কলেজের পড়া-লেখার মান বিশ্লেষন ও যোগ্যতার আলোকে গত ২০০৪ ইং সালে একাডেমিক স্বীকৃতি লাভ করে। এর পর থেকেই শিক্ষক/কর্মচারীদের চোখে দীর্ঘ দিনের প্রত্যাশিত স্বপ্ন ভাসতে থাকে। একাডেমিক স্বীকৃতির আলোকে এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে গত ২০১০ ইং সালে এমপিও ভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রকাশের সময় আবাদপুকুর কলেজটি ওই তালিকায় থাকলেও পরে তা রহস্যজনক কারনে তালিকা থেকে বাদ পড়ে যায় । এর পরেও শিক্ষকদের স্বপ্ন , খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতিষ্ঠানটি এমপিও ভুক্ত হবে। গত এইচ এসসি পরীক্ষায় এই কলেজ থেকে মোট ৭৪ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা থাকলেও ৭২ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয় । এর মধ্যে ৬৮ জন পরীক্ষার্থী এইচ এসসি পাশ করে। যাহার পাশের হার প্রায় ৯২% এবং রাণীনগর উপজেলার ৬টি কলেজের মধ্যে পাশের হারে শীর্ষ স্থানে রয়েছে বলে কলেজটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। তবে কলেজে আরো ভাল পড়া-লেখার সুষ্টু পরিবেশ সৃষ্টি হলে অনেক ভাল ফলা-ফল পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন শিক্ষক/অভিভাবকরা। বর্তমানে কলেজে সেই ইটের দেয়াল আর টিনের ছাউনির বেশ কয়েকটি শ্রেনীকক্ষ ফাটল ধরায় ঝুঁকি আর বড় ধরনের দূর্ঘটনার আশংকা মাথায় নিয়ে ক্লাস করছেন শিক্ষক/শিক্ষার্থীরা।
ওই কলেজের শিক্ষক আব্দুল মতিনসহ শিক্ষকরা জানান,বিনা বেতনে দীর্ঘ বছর ধরে চাকুরি করার ফলে একদিকে যেমন আর্থিকভাবে চরম ক্ষতিগ্রস্থ্য হয়েছেন,অন্য দিকে সংসার জীবনে খুবই দূর্বিসহ: ও মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে তাদের। তবুও তারা নিষ্ঠার সাথে সুষ্টু শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল মালেক নবাব জানান, গত ২০১০ইং সালে এমপিও ভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকায় আবাদপুকুর কলেজের নাম থাকলেও রহস্যজনক কারনে তা পরে বাদ দেয়া হয় । আমরা গত দু’দিন আগে নতুন করে আবেদন করেছি । এছাড়া কলেজে নতুন ভবন না থাকায় সেই পুরনো ফাটল ধরা ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে আতংক আর উৎকন্ঠার মধ্যে পাট্যকার্যক্রম চালাতে হচ্ছে ।
রাণীনগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল জলিল জানান,এমপিও ভুক্তির জন্য যেহেতু আবেদন করেছেন সেহেতু পর্যায়ক্রমে এটি এমপিও ভুক্ত হবে। আর নতুন ভবনের জন্য শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তরে একটি তালিকা পাঠানো হবে।