করোনা ও ভিভি,এন,ডি (রাণীক্ষেত) রোগের প্রভাবে ধ্বংসের মুখে নওগাঁর পোল্ট্রি খামারগুলো জীবন-যাপন জেলার খবর প্রচ্ছদ এপ্রিল ২৯, ২০২০এপ্রিল ৩০, ২০২০0 কামাল উদ্দিন টগর, নওগাঁ প্রতিনিধি ঃ এক মাসের ব্যবধানে নওগাঁর পাইকারি বাজারে সব ধরনের মুরগি ও ডিমের দাম অস্বাভাবিকভাবে কমে গেছে। দাম কমেছে মুরগির বাচ্চারও। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন জেলার প্রায় ৯ হাজার পোল্ট্রি খামারী ও খাদ্য সামগ্রী বিক্রেতা ডিলারেরা। করোনার প্রভাবে ক্রেতা কমে যাওয়ায় মুরগি ব্যবসায় মন্দা নেমেছে বলে জানিয়েছেন খামারি ও ব্যবসায়ীরা। খামারিদের দেয়া তথ্য মতে, এক মাসের ব্যবধানে সব ধরনের মুরগির দাম প্রতি কেজিতে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কমেছে। ডিমের দাম প্রতি ডজনে কমেছে ১৬ টাকা। এক মাস আগে হাইব্রিড জাতের সোনালি মুরগি ২১০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। এই জাতের মুরগি এখন ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এক মাস আগে ব্রয়লার মুরগি কেজি প্রতি ১৪০-১৫০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায়। একইভাবে আগে লেয়ার মুরগি ১৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও এখন ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিটি মুরগির বাচ্চার দাম আগে ছিল ১২ থেকে ১৪ টাকা। দাম কমে প্রতিটি মুরগির বাচ্চা এখন বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৪ থেকে ৫ টাকায়। তবে করোনা ও ভিভি,এন,ডি (রাণী ক্ষেত) রোগে দেখা গেছে ২০১৯ (ডিসেম্বর) এ জেলার প্রতিটি মাঝারি খামারে মুরগি মারা যায় প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার করে। এবং খুদ্র খামারে মারা গেছে প্রায় ৫ থেকে ৬ হাজার মুরগি। এক বিপদ কেটে উঠতেই আবার মহামারী আকারের বিপদ করোনা ভাইরাস। একদিকে মুরগীর রোগ অন্যদিকে করোনায় দেশের সকল রকমের পরিবহন বন্ধ থাকায় বাজারে ডিম ও মুরগী বিক্রি না হওয়ায় বাজার নিম্নমূখী হওয়ায় মরার উপর খারার ঘাঁ হয়ে দাড়িয়েছে। নওগাঁ জেলা প্রাণীসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, নওগাঁ জেলায় ৮ হাজার ৯৫৫টি মুরগির খামার রয়েছে। এর মধ্যে সোনালি মুরগির খামার ৫ হাজার ৩৫৬টি, লেয়ার মুরগির খামার রয়েছে ১ হাজার ৮০৫টি, ব্রয়লার মুরগির খামার ১ হাজার ৬১২টি এবং দেশি মুরগির খামার ১৮২টি। ভিভি,এন,ডি (রাণী ক্ষেত) রোগ থেকে কাঁটিয়ে উঠার পর আবার যদি পোল্ট্রি শিল্প ঘুরে দাড়াতে পারে তবেই রক্ষা হবে এই শিল্প। নওগাঁ সদর উপজেলার পিরোজপুর এলাকার মুরগি খামারি আরিফুজ্জামান (রুবেল) বলেন, ভিভি,এন,ডি (রাণী ক্ষেত) রোগের পর গত জানুয়ারি মাসে আবার নতুন করে তাঁর খামারে দুই হাজার সোনালি জাতের মুরগি লালন-পালন শুরু করেন। মার্চের শুরু থেকেই মুরগি বিক্রি করা হয়। এক মাস আগেও প্রতিটি মুরগির প্রতি কেজিতে পাইকারি দাম ছিল ২১০ টাকা। এখন সেই মুরগি ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। খাদ্য সামগ্রী, ভ্যাকসিন, বিদ্যুৎ খরচসহ প্রতি কেজি সোনালি মুরগির উৎপাদন খরচ পড়েছে ১৮০ টাকা। প্রতি কেজিতে মুরগি বিক্রি করে ৩০ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। নওগাঁ পোল্ট্রি শিল্পের খাদ্য সামগ্রীর ডিলার ব্যবসায়ী মোঃ রাজু আহম্মেদ বলেন। প্রকৃতির প্রভাবে খামারিরা বার বার যে ভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে, এতে খামারিদের সাথে ডিলারদেরও প্রভাব পড়ছে। এ জেলায় এখন প্রায় ৮০% মুরগির খামার বন্ধের পথে। কেননা আমরা বিভিন্ন কোম্পানির কাছে মুরগির ওষধসহ খাদ্য সামগ্রী বাঁকীতে ক্রয় করে আবার এসব খামারিদেরকে বাঁকীতেই দিয়ে থাকি। তাই যখন খামারীরা ডিম ও মুরগীর দাম কম পাবে তখন আমাদের নিকট প্রচুর পরিমান টাকা ঋনে পড়ে যাবে। কারন বেশির ভাগ খামারীদের শুধু খামারই পুজি নিয়ে ব্যবসা শুরু করে। অনেক খামারী আছে যারা ব্যাংক থেকে ঋন নিয়ে ব্যবসা করেন তারাও ঋনের দায়ে দেওলিয়া হয়ে যাবেন। সরকারীভাবে খামারীদের পৃষ্ঠপোষকতা দিলে তারা ঘুরে দাড়াতে পারবে। এ বিষয়ে নওগাঁ পৌর মুরগি বণিক সমিতির সাধারন সম্পাদক দুলাল হোসেন বলেন, করোনার কারণে বর্তমানে পোল্ট্রি শিল্পে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে। খামারে মুরগি ডিম পাড়ছে কিন্তু বিক্রি হচ্ছে না। সব মিলিয়ে খামারিরা বড় সংকটে পড়েছেন। বিশেষ করে ছোট ও মাঝারি খামারিরা বেশি বিপদে পড়েছেন। সরকার ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করায় খামারিদের হয়তো কিছুটা উপকার হবে। জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা হেলাল হোসেন বলেন, চলমান বিরূপ পরিস্থিতির কারণে সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় খামারিরা তাঁদের উৎপাদিত মুরগি ও ডিমের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না। এ অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্থ খামারিদের প্রণোদনা হিসেবে সহজ শর্তে ঋণ নেওয়ার সুযোগ দিয়েছে সরকার। খামারিরা চাইলে এই সুযোগ গ্রহণ করতে পারবেন। ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়ে সরকারিভাবে এখনো কোনো ঘোষণা আসেনি। ভবিষ্যতে এ ধরনের সিদ্ধান্ত হলে তালিকা করে অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্থ খামারিদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। Related Share on Facebook Share 0 Share on TwitterTweet Share on Pinterest Share 0 Share on LinkedIn Share Share on Digg Share Print Print 0 Total Shares করোনা ভাইরাস সম্পর্কে যেকোনো পরামর্শ বা উপদেশের জন্য উল্লেখিত হটলাইনে যোগাযোগের অনুরোধ জানানো হয়েছে : ৩৩৩, ০১৯৪৪৩৩৩২২২, ০১৪০১১৮৪৫৫১; ০১৪০১১৮৪৫৫৪; ০১৪০১১৮৪৫৫৫; ০১৪০১১৮৪৫৫৬; ০১৪০১১৮৪৫৫৯; ০১৪০১১৮৪৫৬০; ০১৪০১১৮৪৫৬৮; ০১৯২৭৭১১৭৮৫; ০১৯৩৭০০০০১১; ০১৯২৭৭১১৭৮৪ এবং ০১৯৩৭১০০১১।স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হটলাইন নম্বর হচ্ছে-১৬২৬৩।এ ছাড়া ফেসবুক, মেসেঞ্জার ও ই-মেইল বার্তা পাঠানো যাবে। ফেসবুক আইডি: Iedcr, COVID-19 Control Room, e-mail : iedcrcovid19@gmail.com