
ইমন খান, গাজীপুর ঃ
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী পরিবর্তন । প্রার্থিতার বিষয়ে ‘সমঝোতা’ এসেছে দলটিতে। এবার সেখানে প্রার্থী হচ্ছেন ছাত্রলীগের সাবেক নেতা মো. জাহাঙ্গীর আলম। গতবারের প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা আজমত উল্লাহ খানকে খুশি রাখতে বিকল্প ব্যবস্থা নিয়েছে দল।
২০১৩ সালের ৬ জুলাই গাজীপুর সিটির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সিটি করপোরেশন নির্বাচনের বিধান অনুযায়ী, সিটি করপোরেশনের প্রথম সভা থেকে করপোরেশনের মেয়াদ গণনা শুরু হয়। পাঁচ বছর মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগের ছয় মাসের মধ্যে যে কোনো দিন ভোটগ্রহণ করা যায়। সে হিসাবে ১৫মে ২০১৮ তারিখে গাজীপুর সিটিতে নির্বাচন ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশন ।
ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীর দৌড়ে আছেন গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান ও সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম। দুজনই নৌকা প্রতীক পেতে মুখিয়ে ছিলেন । তবে বিগত নির্বাচনে মনোনয়ন বঞ্চিত জাহাঙ্গীরের ওপর আস্থা রাখলেন দল।
সূত্র জানায়, দলে কোন্দল সৃষ্টি হতে পারে সে শঙ্কা থেকেই অনেক আগেই প্রার্থিতার ব্যাপারে দুই প্রার্থীর মধ্যে সমঝোতায় এসেছে সরকারি দল আওয়ামী লীগ। দুজনকেই খুশি রাখা হচ্ছে। সম্প্রতি দলের শীর্ষ নেতৃত্ব এ বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসে। সিদ্ধান্ত মনোনয়নপ্রত্যাশী দুই নেতাকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দলের দায়িত্বশীল এক নেতা বলেন, এবার আগেভাগেই গাজীপুরের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কারণ দুজন শক্তিশালী প্রার্থী। আগে থেকে সিদ্ধান্ত না নেওয়া হলে ভোটের মাঠে প্রভাব পড়বে। তাই জাহাঙ্গীরকে প্রার্থী করার সিদ্ধান্ত আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে জেলা নেতারা যেমন সিদ্ধান্ত জানলেন, জাহাঙ্গীরেরও নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে সুবিধা হবে।
জানা গেছে, গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকাভুক্ত ছয় মৌজা ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার শিমুলিয়া ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত এমন দাবি করে ২০১৫ সালে হাইকোর্টে রিট করেন শিমুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবিএম আজহারুল ইসলাম। আদালত বিবাদীকে ৬০ দিনের মধ্যে তর্কিত বিষয়টি নিষ্পত্তির আদেশ দিয়ে রিট নিষ্পত্তি করেন। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সেটি নিষ্পত্তি করেছে বলে জানা গেছে।
২০১৩ সালে সিটি নির্বাচন হয়েছিল নির্দলীয়। সে বছর গাজীপুর সিটি নির্বাচনে বিএনপি জোট সমর্থিত অধ্যাপক আবদুল মান্নান টেলিভিশন প্রতীকে লড়াই করে তিন লাখ ৬৫ হাজার ভোট পেয়ে জয়ী নগরপিতা নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ১৪ দল সমর্থিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা খান দোয়াত-কলম প্রতীক পেয়েছিলের দুই লাখ ৫৮ হাজার ভোট। সেই ভোটের শুরুতে ১৪ দলের সমর্থন চেয়ে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম। ভোটগ্রহণের আগে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেও তিনি ৩১১৯ ভোট পেয়েছিলেন। জাহাঙ্গীর আলমের প্রার্থিতায় কিছুটা বেকায়দায় পড়ে আওয়ামী লীগ। তাই এবার আগে থেকেই প্রার্থী নির্বাচন করে ভালোভাবে ভোটযুদ্ধে নামতে চাইছে ক্ষমতাসীন ।